"আমরা শোকাহত এবং তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি"
( নওগাঁ জেলা বিএনপি পরিবার)
মরহুম আকতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নু ভাইয়ের ইন্তেকালে, নওগাঁ জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র নজমুল হক সনি ভাইয়ের কথা দিয়েই শুরু করছি, " আখতার হামিদ
সিদ্দিকী (নান্নু) আমাদের অবিভাবক ছিলেন, তিনি সবসময় আমাদের সৎ পরামর্শ
দিয়ে রাজনীতির পথ দেখিয়েছেন। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আর আমি
মনে করি তার মৃত্যুতে শুধু নওগাঁবাসী নয় বাংলাদেশের গোটা উত্তরবঙ্গ একজন
কৃতি সন্তান হারিয়েছে "।দেশের এমন ক্রান্তীলগ্নে আকতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নু ভাইয়ের মতো বিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে এমন অকাল প্রয়ান না চাইলে ও আমাদের মেনে নিতে হয়েছে, প্রকৃতির কাছে মানুষ সত্যি বড় অসহায়।
তিনি শুধু বদলগাছী , মহাদেবপুর বা উত্তরবঙ্গের নয় বরং সারা বাংলাদেশের নেতা ছিলেন, তার বিজ্ঞতা এবং অভিজ্ঞতার প্রভাব ছিলো বাংলদেশ রাজনৈতিক অঙ্গনের প্রতিটা স্তরে। তিনি ছিলে শহীদ জিয়ার আদর্শে গড়া এক মহৎ প্রান মানুষ। তিনি পৃথিবীতে না থাকলেও তার কর্মমুখর এবং বৈচিত্রময় রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস আমাদের সামনে আছে, যদি ও তা বিক্ষিপ্ত, তা যদি সংগ্রহ পরবর্তী একত্রিকরন করে স্ট্যাডি করা যায় তবে বর্তমান ক্রান্তীকালিন সময়ে এবং আগামীতে ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা এবং সময় উপযোগী কর্ম পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহন অনেক সহজ আর পারফেক্ট হবে। কারন তিনি ছাত্র জীবন হতে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত একজন সফল আর অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
আকতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নু ভাইয়ের মতো এমন দেশ, দল, এবং এলাকা অন্তপ্রান মানুষ পুরো উত্তরবঙ্গে সত্যি হাতে গোনা। তিনি সার্বজনীন ভাবে ছিলেন বদলগাছী, মহাদেবপুর বাসীর জন্য একান্ত কল্যানকামী।
তার ইন্তেকালের কিছু পূর্ব হতেই তার অসুস্থতা এবং বার্ধ্যকের সুযোগ নিয়ে বিরোধীদলীয় প্রভাবে বদলগাছী মহাদেবপুর বিএনপি পরিবারে অন্তকন্দল এবং ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। যা সত্যি দুঃখজনক। এ ভাঙ্গন এখন চরম পর্যায়ে গিয়ে পৌছেছে। আর এই ভাঙ্গনের সুযোগেই বিএনপি এর ঘাটি বলে খ্যাত বদলগাছী-মহাদেবপুরে আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিরোধীদল আবারো ক্ষমতায় আসবে, এবং নির্বিচারে যত রকমের অন্যায়-অত্যাচার, দূর্নীতি, বিরোধীদলীর নেতা কর্মীদের হয়রানী, নিপিরন, গুম সহ আগামী প্রজন্মকে নকল করে পাশ বা না পড়েই পাশ বা অসার প্রজন্ম এবং মাদকের বিষাক্ত ছোবলে বিনষ্ট করার ধ্বংসাত্বক কার্যক্রম আরো ভয়াবহ আকারে শুরু করবে ।
যা হবে শহীদ জীয়ার আর্দশে গড়া এ দেশ এবং দলের জন্য স্বইচ্ছায় আত্মহননের মতো এক বিরাট বিপর্যয়। যার শেষ পরিনতির কথা সত্যিই আর ভাবা সম্ভব হচ্ছে না।
যার ভিতরে নুন্নতম দেশপ্রেম , দল প্রতি ভালবাসা, এলাকার প্রতি ভালবাসা বা নিজ নিজ পরিবারের প্রতি ভালবাসা আছে সে কখনোই দলীয় অন্তকোন্দলকে প্রশ্রয় দিতে পারে না। আওয়ামী প্রভাবে, পরামর্শে নিজের পায়ে কুড়াল মারতে পারে না। যদি কোন নেতা বা কর্মী দলীয় মান উন্নয়নে, কর্মীদের মান উন্নয়নে ভূমিকা না রেখে অন্তদলীয় কোন্দলকে প্রশ্রয় দেয় অথবা তা নিরশনে ভূমিকা না রাখে তবে বুঝতে হবে সে দলের ভিতরে অবস্থান করে বিরোধীদল আমলীগকে সহযোগীতা করছে। যা এক কথায় বিশ্বাসঘাতকতা ।
এটাতো সর্বজন স্বীকৃত যে, দেশ ও দলের নেতা কর্মীরা ফেরেস্তা নয়, মানুষ। যাদের ভুল হয়, ভ্রান্তি হয়, আর তা যখন বুঝতে পারে, তখন তা শুধরেও নেয়। সে হিসাবে অন্তদলীয় কোন্দল দেশ - জাতি এবং দলের জন্য এক বিরাট ভুল পদক্ষেপ। যা শুধারে নিয়ে একত্র হয়ে দেশ ও জাতির সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখাই হলো সত্যিকারের মানুষের কাজ, দেশপ্রেমিক নাগরিকের কাজ, একজন আদর্শ কর্মীর কাজ , একজন জনপ্রিয় নেতার কাজ।
আর তা হাত কলমে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াউর রহমান।
তিনি তার কর্মময় জীবনে একজন নেতা হিসাবে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন একজন নেতার চরিত্র, আচরন এবং পরিকল্পনা- কর্মপদ্ধতি এবং তা বাস্তবায়নে কি ধরনের ভূমিকা রাখতে হয়, ঠিক তেমনি দেখিয়ে দিয়ে গেছেন একজন কর্মী হিসাবে মাঠ পর্যায়ে সাধারন মানুষের সাথে মিশে কিভাবে কাজ করতে হয়,
দেখিয়েছেন দলে কর্মীর কাজের ধরন, নেতার আনুগত্য ও নিয়োমিত মান উন্নয়নে একজন দক্ষ নেতা একজন মহৎ প্রান দেশ প্রেমিক মানুষ হওয়ার পথ। দিয়ে গেছেন দলের সংবিধান, কর্মপদ্ধতি, মূলনীতি সহ বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পন্ন এবং বিশ্বের দরবারে এক উন্নত দেশ হিসাবে উপস্থাপন করার বৈচিত্রময়, বহুমূখী এবং কর্মবহুল জীবন ইতিহাস।
কোন কাজের উদ্বোধনের জন্য বা ছবি তোলার জন্য যে তিনি কোদাল খোন্তা হাতে নিয়েছেন তা কিন্তু নয়, বরং সবদিক সামলে একজন সাধারন কর্মীর মত, একজন শ্রমীকের মত, একজন দেশপ্রেমিক মানুষের মত সময় দিয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছেন।
দলের স্বঘোষিত নেতা হওয়ার আগে সকল নেতা কর্মীদের উচিত দলের সকল তথ্য-উপাত্ত, ইতিহাস জেনে আলোচনা স্বাপেক্ষে আগামীর জন্য একসাথে থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা। ছোট ছোট ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত হয়ে দেশ-জাতি, দল এমনকি নিজের জন্য কোন সঠিক পদক্ষেপ গ্রহন করা সম্ভব নয় বরং তা হিতে বিপরিত হয়ে পুরো দলের জন্য হুমকি হয়ে দাড়ায়।
আবার ও সকলের দোয়া ও সহযোগী কামনা করছি, দলীয় অন্তকোন্দল দূরীকরনে, সাধারণ কর্মীদের সাপ্তাহিক, মাসিক মান উন্নয়ন বিষয়ক এলাকা ভিত্তিক কর্মসভা, কর্মশালার ব্যবস্থা গ্রহনে, যেন একজন কর্মী হয় জ্ঞানী, স্বচ্ছল, কর্মচঞ্চল এবং সচেতন ভাবে নেতার আনুগত্যকারী। যেন দলে ক্ষমতালোভী স্বার্থপর নেতা-কর্মীদের শুধরে দিতে ভূমিকা রাখতে পারে, যেন দলের আগাছা, ও অপ্রয়োজনীয় অর্থের ব্যবহার, বয়ানবাজী , চাটুকারিতা, দলীয় দূর্নীতি কে বিনাশ করে গনতান্ত্রিক উপায়ে নেতা নির্বাচন করতে পারে, যেন দেশ ও জাতির ভাগ্য উন্নয়নে সময় উপোযোগী ভূমিকা গ্রহন এবং সার্বিকদিক বিচার বিশ্লেষন করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
কারন শহীদ প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াউর রহমানের ভাষ্যমতে---
" জাতীয়তাবাদী দলের প্রানই হলো দলের প্রশিক্ষিত কর্মীগন"
আর বর্তমানে স্বার্থপর , ক্ষমতালোভী , বিরোধীদলীয় প্রভাবে দলে ভাঙ্গন সৃষ্টিকারী, অন্তকোন্দল ঘোটনে পোটিয়শি, স্বঘোষিত নেতারা কর্মীদের নামমাত্র অর্থনৈতিক সহযোগিতার দ্বারা করে রেখেছে দলীয় শিক্ষায় মূর্খ আর চাটুকারীতায় উত্তম।
যা উপরে উক্ত উক্তির পরিপন্থি, যা জাতিয়তাবাদী দলের আদর্শের পরিপন্থি এবং এই সর্বগ্রাসী মহামারি ভাইসার নির্মূলে এগিয়ে আসুন , যদি আপনি দেশ প্রেমিক হয়ে থাকেন, যদি দলে প্রতি আপনার ভালবাসা থেকে থাকে । কারন এতদিন উত্তরবঙ্গ জাতীয়তাবাদী দলের নেতা কর্মীদের , বিশেষ করে নওগাঁ জেলা জাতিয়তাবাদী দলের একজন অভিজ্ঞ রাজনৈতিক অভিভাবক ছিলেন, যার কারনে অনেক ঝড়ঝন্জা আমরা বুঝতেই পারিনি, তিনি বটবৃক্ষের ন্যায় আগলে ছিলেন। তিনি আর নেই আমাদের মাঝে।
এটা স্বীকার করতে কোন দ্বিমত কারো থাকার কথা না যে, একটা মানুষ , একটা নেতা , বা একজন কর্তার পক্ষে দলের বা পরিবারের সকলেরই মন রক্ষা করে চলতে পারবে। এলাকার উন্নয়নে, দেশের স্বার্থে, এবং কর্তা হিসাবে পরিবারের স্বার্থে এমন সব দ্বায়িত্বশীল মানুষদের অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়, যার হয়তো কারো কারো মনপুত হয় না।
কিন্তু তার মানে এই নয় যে, ছেলে বাবার নামে উল্টা পাল্টা বলে বেড়াবে, রাগ করে বাজে আচরন করে বসবে, বা এই বাবা ভাল নয় আর একজনকে বাবা বলে ডাকা শুরু করবে।
সন্তানকে বুঝতে হবে যে বাবা আমার আগে এই পৃথিবীতে এসেছেন এবং আমার চেয়ে তিনি আমার বিষয়ে ভাল বোঝেন আর তারপর ও যদি আমার আবদার রক্ষা করতে যায় তাতে পরিবারে অন্য সদস্যদের ক্ষতি হতে পারে অথবা আমার ভালোর জন্য বাবা এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। হুম হোতেই পারে যে, বাবা তার সিদ্ধান্তে ভুল করেছেন, সেক্ষেত্রে বাবা-সন্তান আলোচনা সাপেক্ষে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহনে ভূমিকা রাখবে।
জাতীয়তাবাদী দল 'বিএনপি' ও ঠিক একটি পরিবার , আর আজ ' নওগাঁ জেলা বিএনপি পরিবার' একজন আকতার হামিদ সিদ্দিকী নান্নুর মত অভিজ্ঞ অভিভাবক হারিয়েছি, আমরা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করছি, আল্লাহপাক যেন তার প্রতি স্বদয় হোন। আমিন।
আর তাই এই পরিবারের সকলে একই পরিবারের অর্ন্তভুক্ত হয়ে দলীয় মান উন্নয়নের মাধ্যমে গনতান্ত্রিক উপায়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে দলের যে কোন পদের জন্য মনোনয়োন প্রত্যাশায়, অর্থের বা চাপাবাজীর ফুলঝুড়ি নয়, সৃজনশীলতার মাধ্যমে , ভাল আচরন ও ব্যবহারের মাধ্যমে, সাধারন নেতা-কর্মীদের সাথে পারস্পারিক সম্পর্ক উন্নয়নে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করার মাধ্যমে এগিয়ে আসলে নিশ্চয়ই তাতে ভালো ছাড়া দোষের কিছু নাই ।
এত বড় লেখা হয়ে যাবে তা বুঝতে পারি নি। এখন শংকা হচ্ছে যে , আমার প্রিয় কর্মী ভাইয়েদের বা নেতাদের এই লেখা পড়ার ধর্য্য হবে তো?
যাই হোক আমি আমার দৃষ্টিকোন থেকে আমার উপলব্ধি থেকে মনের ভিতরে জমে থাকা কথা গুলো বললাম , আর যদি কোন সুহৃদয় ভাই এই লেখা ভাগ্য জোরে পড়ে ফেলেন, তবে কোন ভুলভ্রান্তি পেলে জানাবেন এবং আপনার মূলবান মন্তব্য প্রদান করে এই স্বঘোষিত কর্মী ভাইকে একজন আদর্শ কর্মী হতে সহায়তা করবেন। ধন্যবাদ।
----- লেখক - ইমন নুসরাত----
একজন স্বঘোষিত কর্মী
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
নওগাঁ জেলা।